নড়াইল পৌরসভায় সুপেয় পানি সরবরাহের জন্য সাড়ে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পানি শোধনাগার প্ল্যান্ট চালু হওয়ার পর গত চার বছরে ছয় মাসও চলেনি।
পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, বারবার চেষ্টা করেও নানা যান্ত্রিক সমস্যার কারণে এটি চালু করা সম্ভব হয়নি। আবার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ভাষ্য হলো, ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ায় পরিশোধনাগারটি অকেজো হয়ে আছে.
জনগণের করের টাকায় বানানো এই শোধনাগার অচল হয়ে পড়ে থাকা নিয়ে পৌরসভা ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কর্তৃপক্ষের কারও কোনো বিকার নেই। অথচ বিশুদ্ধ পানির সংকটে ভুগছেন পৌরবাসী।
এই পরিশোধনাগারে এতে প্রতি ঘণ্টায় ৩৫০ ঘনমিটার পরিশুদ্ধ পানি উৎপাদন হওয়ার কথা। এটি দিয়ে নড়াইল পৌরসভার বাসিন্দাদের চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি পানি সরবরাহ সম্ভব। নির্মাণ শেষে ২০২০ সালের প্রথম দিকে পৌরসভার কাছে এটি হস্তান্তর করা হয়। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ‘৩৭ জেলা শহর পানি সরবরাহ প্রকল্পে’র আওতায় ১০ কোটি ৫৫ লাখ ৮৩ হাজার টাকা ব্যয়ে এটি নির্মাণ করা হয়।
শহরের রূপগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী ভওয়াখালীর বাসিন্দা আবু সাইদ বলেন, পৌরসভা পরিচালিত পাম্প থেকে যে পানি সরবরাহ করা হয়, তা পানযোগ্য নয়। ওই পানির সঙ্গে ঝাঁকে ঝাঁকে ময়লা আসে। অথচ এত টাকার তৈরি পানি শোধনাগারটি অকার্যকর পড়ে আছে।
২০২০ সালের প্রথম দিকে চালু হওয়ার পর পানি শোধনাগারটি মাত্র তিন মাস সচল ছিল। এরপর বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমান মেয়র আঞ্জুমান আরা দায়িত্ব গ্রহণের পর মেরামত করে আবার ২০২১ সালে চালু করেন। তখন সেটি সচল থাকে মাত্র দুই মাস। এরপর আর চলেনি।
কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) নড়াইল জেলার সাধারণ সম্পাদক কাজী হাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার জানামতে দেশের ৩৭টি জেলায় ওই প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ার কথা। অন্য জেলার প্রকল্পের কী অবস্থা জানি না। সুপেয় পানির ব্যবস্থার জন্য এটি সরকারের একটি ভালো উদ্যোগ ছিল। কিন্তু বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ ও পৌরসভা উভয়ের অবহেলার কারণে এত ভালো উদ্যোগ সফল হয়নি। এটিকে কীভাবে সচল করা যায় তার পদক্ষেপ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে। এ ছাড়া এত টাকা অপচয় হলো। এর তদন্ত হয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
Subscribe
Subscribe to our newsletter to get our newest articles instantly!