ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের এক বিস্ময় ‘দ্য ওভারসিজ হাইওয়ে’। সাগরের ওপরে নির্মিত ১১৩ মাইলের এই মহাসড়ক সেখানকার পর্যটনের জন্য একটি আশীর্বাদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই পথ ধরে মিয়ামি থেকে যাওয়া যায় যুক্তরাষ্ট্রের সর্বদক্ষিণের দ্বীপ কি ওয়েস্টে। পথে দেখা মেলে চোখজুড়ানো আরও নানা দ্বীপের। এই মহাসড়ক ধরে সম্প্রতি ভ্রমণে বেরিয়েছিলেন সাংবাদিক স্ট্রাসি টিও। পাঠকদের কাছে ভ্রমণের সেই অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন তিনি। জানিয়েছেন ওভারসিজ হাইওয়েজের ইতিহাসও।
যুক্তরাষ্ট্রে গ্রীষ্মকাল প্রায় শুরু হয়ে গেছে। তল্পিতল্পা গুছিয়ে অনেকেই ইতিমধ্যে ভ্রমণে বের হতে শুরু করেছেন। সেই তালিকায় আমরাও নাম লিখিয়েছি। যে পথ ধরে আমরা এগোচ্ছি, সেটি আমাদের খুবই পছন্দের ‘দ্য ওভারসিজ হাইওয়ে’ বা ‘সাগরের ওপর মহাসড়ক’। সাগরের মধ্যে ১১৩ মাইল দীর্ঘ এই ‘ভাসমান’ মহাসড়ক ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের হালচাল চিরদিনের জন্য বদলে দিয়েছে।
আমরা আটলান্টিক মহাসাগর ও মেক্সিকো উপসাগরের মাঝামাঝি কোনো এক জায়গায়। সাগরের বুকে সড়ক ধরে এগিয়ে যাচ্ছি। যত দূর চোখ যায় নীল জলরাশি। কখনো ভেসে উঠছে দুরন্ত ডলফিন। ওপরে গাঙচিলের কিচিরমিচির। সাগরের পানিতে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে মাছ ধরা নৌকাগুলো। আমারও মনে হলো, যাই ছিপ পেতে বসি। তবে চাইলেই তো সব হয় না। আমাদের গাড়ির গতি যে ঘণ্টায় ৫০ মাইল।
ফ্লোরিডার মিয়ামি থেকে ‘কি ওয়েস্ট দ্বীপে’ যাওয়া আজকের দিনের মতো কখনোই এত সহজ ছিল না। বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বদক্ষিণে এই দ্বীপে যেতে হতো নৌকায় চড়ে। সময় লাগত কমপক্ষে এক দিন। মাথায় রাখতে হতো আবহাওয়া আর সাগরের ঢেউয়ের কথাও। আজ যে পরম নিশ্চিন্তে গাড়ি চালিয়ে এই পথ পাড়ি দিচ্ছি, সে জন্য অবশ্যই ধন্যবাদ দিতে হয় দ্য ওভারসিজ হাইওয়েকে। এই মহাসড়ক যুক্ত করেছে ৪৪টি দ্বীপকে। পথজুড়ে রয়েছে মোট ৪২টি সেতু।
ওভারসিজ হাইওয়ের কাজ আসলে শুরু হয়েছিল ‘ওভার–সি রেলওয়ে’ হিসেবে। এই পরিকল্পনা এসেছিল হেনরি মরিসন ফ্লাগলারের মাথা থেকে। তাঁকে আধুনিক ফ্লোরিডার জনক বলা হয়। ১৮৭০ সালে তৎকালীন ধনকুবের ব্যবসায়ী জন ডি রকফেলারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে জ্বালানি তেলের ব্যবসা খোলেন তিনি। প্রতিষ্ঠানের নাম দেওয়া হয় ‘স্ট্যান্ডার্ড অয়েল কোম্পানি’। বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও শক্তিশালী ব্যবসাগুলোর একটি হয়ে উঠেছিল।
Subscribe
Subscribe to our newsletter to get our newest articles instantly!