ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের পাশাপাশি বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতিতে একটি পরিচিত নাম মধুর ক্যান্টিন। বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে জড়িয়ে আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই মধুর ক্যান্টিনের নাম। এই মধুর ক্যান্টিনের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন মধুসূদন দে, যিনি মধুদা নামেই বহুল পরিচিত ছিলেন। সকলের প্রিয় এই মধুসূদন দে কে আজ রোববার বুদ্ধিজীবীর স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক আজ এ ঘোষণা দেন। বুদ্ধিজীবীদের তালিকায় মধুসূদন দে বা মধুদার বাবার নাম লেখা হয়েছে আদিত্য চন্দ্র দে, মায়ের নাম যোগমায়া দে। গ্রাম বা মহল্লা হিসেবে দেওয়া হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম। যার থানা-রমনা ও জেলা-ঢাকা।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এখন পর্যন্ত চার ধাপে ৫৬০ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে আজ যুক্ত করা হয়েছে নতুন আরও ১১৮ জনের নাম। তাঁদের মধ্যে স্থান পেয়েছেন মধুর ক্যান্টিনের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ মধুসূদন দে।
শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকায় মধুদাকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘মধুদা একজন চায়ের দোকানদার ছিলেন। পাশাপাশি এ দেশে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় যত আন্দোলন হয়েছে, রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা আন্দোলন-প্রতিটি ক্ষেত্রে মধুসূদন দের ভূমিকা ছিল। তিনি সবাইকে সহযোগিতা করেছেন।সেই সময় তিনি বিনা পয়সায় মানুষকে চা খাইয়েছেন। তাই শহীদ বুদ্ধিজীবীর সংজ্ঞায় না পড়লেও মধুদাকে বুদ্ধিজীবীর তালিকায় রেখেছে সরকার। এই একজনকেই আমরা ব্যতিক্রমভাবে শহীদ বুদ্ধিজীবীর মর্যাদা দিয়েছি। তবে এই পরিবার কোনো ভাতা পাবে না।’
বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের দলিলপত্র, অষ্টম খণ্ডের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালরাতের পরদিন সকালে বর্বর পাকিস্তানি সেনারা জগন্নাথ হলের পার্শ্ববর্তী শিববাড়ি আক্রমণ করে। সেখানেই মধুসূদন দে তাঁর পরিবার-পরিজন নিয়ে থাকতেন। পাকিস্তানি সেনারা তখন ওই বাসা থেকে তুলে নিয়ে মধুসূদন দে, তাঁর স্ত্রী, বড় ছেলে ও তাঁর নববিবাহিত স্ত্রীকে হত্যা করে।
বর্তমানে মধুর ক্যান্টিন পরিচালনা করছেন তাঁর ছেলে অরুণ কুমার দে। বাবার স্বীকৃতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি অরুণ দে বলেন, ‘আমরা অনেক আগেই বাবার স্বীকৃতির জন্য আবেদন করেছিলাম। এখন সরকার স্বীকৃতি দিয়েছে, এই খবর শুনে খুব ভালো লাগছে।’
Subscribe
Subscribe to our newsletter to get our newest articles instantly!