তখন জীবনের কেবল সকালবেলা, দুপুরের প্রখরতা ক্রমেই ভোরের কোমলতাকে গ্রাস করছিল। হৃদয়নামে স্থান-কালের এক পরমবিন্দু অনুভূত হচ্ছিল ক্ষীণভাবে,কৌতুহল তীব্র হতে তীব্রতর হয়ে মস্তিষ্কে চলছিল নতুন সংযোগ তৈরীর এক মহাযজ্ঞ।অনন্য এক ভৌত-মহাজাগতিক ঘটনার সাক্ষী হচ্ছিলাম আমি।
তুমি নিজের অজান্তেই এমন এক পর্যবেক্ষকের সচেতন বাস্তবতায় ধরা পড়েছিলে যে তোমাদের রুচির মিটারে কদাকার মোড়কে ধারণ করত অসীমের এক সিংহদুয়ার। যখন তোমার চোখে প্রতিফলিত প্রথম কণা-তরঙ্গ আমার অক্ষিপটে এসে পড়ল তখন মনে হচ্ছিল সেই মহা-বিস্ফোরণ প্রত্যক্ষ করছি আবার!যেন এক অসীম শক্তি হৃদয়ের স্থান-কাল বুদবুদটিকে ফুলানোর চেষ্টা ক্রমশ বাড়িয়েই চলছিল সূচকীয় হারে, তোমার অস্তিত্বকে জায়গা করে দেওয়ার জন্য।
তোমার ঐ খুনী চোখের আইরিশ যেন পর্যবেক্ষণযোগ্য মহাবিশ্বের নকশা আর তার মাঝে তাঁরারন্ধ্রগুলো যেন এক একটি বিষাদের কৃষ্ণগহ্বর, সচেতন আমাকে অবচেতনের পানে এক অতল গহ্বরে পতিত হতে বাধ্য করেছিল।আমি জানতাম সেখান থেকে মুক্তির কোন উপায় নেই। তবুও,অজানারে জানার এক অতিপ্রাকৃতিক মোহ কাজ করছিল আমার এই মহাজাগতিক পতনকালে।কয়েক বিলিয়ন বছর নাকি কেটে গেছে তোমাদের ঘড়িতে আমি পলক ফেলতে না ফেলতেই।আমার এই ক্ষুদ্র পতনকাল তোমাদের অসীম মহাকালের রেখাকে ধারণ করছিল আমার অজান্তেই।
যদি ঘুণাক্ষরেও জানতে পারতাম নিয়তির বিধানে এ যাত্রার গন্তব্য হবে কেবল বিষাদের পরমবিন্দু তবে তোমার ঐ চোখের ত্রিসীমানায় প্রবেশ করতাম কি না কে জানে! এতে তোমার কোন দোষ হয়ত নেই,সবকিছুতেই কি আর কার্যকারণ খাটে? তোমার ঐ শ্বেত-গহ্বর সন্ধানদানের মিথ্যে প্রতিশ্রুতিকে প্রাকৃতিক স্বীকার্য ভেবেই না হয় ক্ষমা করে দিব।কৃষ্ণের স্থান কৃষ্ণগহ্বরেই হোক। তবে মনে রেখো,ছলনায় মেতে সম্ভাবনাময় সৃষ্টির এই মহোৎসবকে পন্ড করে, আমার প্রথম প্রেমের মহাবিশ্বকে ধ্বংসস্তুপের যে রুপ তুমি দিয়েছিলে তাতে তুমিও চাপা পড়ে থাকবে অনন্তকাল, হে বহুগামিণী!
Subscribe
Subscribe to our newsletter to get our newest articles instantly!