fbpx
Ad imageAd image

নরসুন্দায় পাওয়া গেলো নিখোঁজ ছাত্রলীগ নেতার গলিত লাশ

নিহত ছাত্রলীগ নেতা মোখলেছ উদ্দিন ভূঁইয়া

হাসান লিংকন
হাসান লিংকন
নরসুন্দায় পাওয়া গেলো নিখোঁজ ছাত্রলীগ নেতার গলিত লাশ

গত ২৯ মার্চ রাতে তারাবি পড়তে গিয়ে নিখোঁজ হন ছাত্রলীগ নেতা মোখলেছ উদ্দিন ভূইয়া। অনেক খোজাখুজি করে ব্যর্থ হয়ে, ৩১ মার্চ সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন মোখলেছের বড় ভাই মিজানুর রহমান। অবশেষে আজ মঙ্গলবার বিকাল ৪ টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিখোঁজ ছাত্রলীগ নেতা মোখলেস উদ্দিন ভূঁইয়া জেলার মিঠামইন উপজেলার কেওয়ারজোর ইউনিয়নের ফুলপুর গ্রামের কৃষক মকবুল হোসেনের ছেলে। সে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। সম্প্রতি সে গুরুদয়াল সরকারি কলেজ থেকে বাংলা বিষয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে, পাশাপাশি জেলা জজ আদালতের একজন পেশকারের সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিল।

বিগত ৩ মাস যাবত মোখলেস শহরের হারুয়া বৌ বাজার এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। ঘটনার দিন (২৯ মার্চ) তিনি তারাবির নামাজ পড়তে পাগলা মসজিদে যান, কিন্তু আর বাসায় ফেরেননি। পরিবারের লোকজন অনেক খোজাখুজির পর ব্যর্থ হয়ে সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের করে এবং পাশাপাশি নিজেরাও মোখলেছের বাসার আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ অনুসন্ধান করে।

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় ২৯ মার্চ রাত ৯ টা ৪৪ মিনিটে মোখলেছ পায়ে হেঁটে বাসায় ফিরছে এবং তার পিছন পিছন হাটছে তারই এক বন্ধু মিজান। যদিও মিজানের বাসা এই এলাকায় ছিলো না। এই ফুটেজ দেখে পরিবারের সন্দেহ হলে তারা মিজান সহ অজ্ঞাত ৪/৫ জনকে আসামী করে ১৬ এপ্রিল একটি অপহরণ মামলা দাখিল করে।

- Advertisement -

অপহরণ মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশ গত শনিবার ২০ মার্চ,হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ থেকে চার জনকে আটক করে। আটককৃত ব্যক্তিরা হলেন মোখলেছের বন্ধু মিঠামইনের কেওয়ারজোর ইউনিয়নের ফুলপুর গ্রামের মিজান শেখ (২৮), তাঁর বাবা শেফুল শেখ (৬৫) ও মিজানের দুই ভাই মারজান শেখ (২৬) ও রায়হান শেখ (২১)।

পুলিশ আসামীকে সাথে নিয়ে উদ্ধারকাজ পরিচালনা করে

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ বলেন, ‘কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় মোখলেছ নিখোঁজ মর্মে একটি সাধারণ ডায়েরি হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আমাদের প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করি। কিন্তু পরবর্তীতে নিখোঁজের পরিবারের পক্ষ থেকে অপহরণের মামলা করা হলে পুলিশ সন্দেহভাজন কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাঁরা হত্যার কথা স্বীকার করে।’

আসামী মিজানের দেওয়া স্বীকারোক্তির উপর ভিত্তি করে তাকে নিয়ে ফায়ার সার্ভিসের একদল ডুবুরি দুইদিন ব্যাপী শহরের নরসুন্দা নদীতে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে। গতকাল সারাদিনেও মরদেহের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। অবশেষে আজ মঙ্গলবার বিকাল ৪ টার দিকে নদীর কচুরিপানার জঞ্জাল থেকে শরীরে সিমেন্টের ব্লক বাধা অবস্থায় মাথাবিহীন গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। এর আগে ঘটনাস্থল থেকে নিহতের ব্যবহৃত লুঙ্গি, বাসার চাবি ও হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করা হয়।

পুলিশের উপস্থিতিতে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল অনুসন্ধান চালাচ্ছে

মোখলেছের বড় ভাইয়ের ভাষ্যমতে, আসামী মিজান শেখের কাছে তার ভাই নিহত মোখলেছ ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা পায়। তাছাড়া বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে মামলা মোকদ্দমাও চলছে। এসব কারণেই তার ভাইকে হত্যা করা হতে পারে।

এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, গতকাল সোমবার থেকে উদ্ধার অভিযান চলছিল। আজকে (মঙ্গলবার) বিকেল ৪টার দিকে নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মরদেহ বিকৃত হয়ে যাওয়ায় অধিকতর নিশ্চিতকল্পে প্রয়োজনবোধে ডিএনএ পরীক্ষাও করা হবে। আর আটকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

- Advertisement -

এদিকে ছেলের শোকে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছিলেন মোখলেছের বাবা মকবুল হোসেন। এক পর্যায়ে গত ১৩ এপ্রিল স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান।

Subscribe

Subscribe to our newsletter to get our newest articles instantly!

ফলো করুন

সোশ্যাল মিডিয়াতে আমাদের সাথে থাকুন
জনপ্রিয় খবর
মতামত দিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *