রবিবার (২১ জানুয়ারি) ধর্ষণ মামলায় কিশোরগঞ্জে বাজিতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন কে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। কিশোরগঞ্জে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-২ এ হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে শুনানি শেষে কিশোরগঞ্জ জেলা আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
কিশোরগঞ্জ জেলা জজকোর্টের নারী ও শিশু নির্যাতন আদালতের বিশেষ (পিপি) অ্যাডভোকেট এম এ আফজল কিশোরগঞ্জ পোস্ট কে জানান, এই মামলায় বাজিতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গত বছর ২০২৩ইং সালের ২১ই মে কিশোরগঞ্জে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এ ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে বাজিতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে বিচার প্রার্থী হন। বিচারক মো. রেজাউল করিম অভিযোগটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে তদন্তের নির্দেশ দেন।
ভুক্তভোগী নারীর ধর্ষণের ঘটনা তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কিশোরগঞ্জে জেলা আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের পর আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। এই পরিস্থিতিতে আ.লীগ নেতা মামুন হাইকোর্ট থেকে তিন মাসের আগাম জামিনে মুক্তি নিয়েছিলেন।
ভুক্তভোগী নারী দাবি করেন অভিযোগে, কয়েক বছর আগে কিশোরগঞ্জে বাজিতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে ফোনে পরিচয় হয়। এই পরিচয় সুবাদে ফোনে ভুক্তভোগী নারীর সাথে প্রায় সময়ই কথাবার্তা হতো আ.লীগ নেতার। কিন্তু কথা বলতে বলতে একপর্যায়ে তাদের মাঝে আন্তরিকতা ও প্রেমের সম্পর্কে গড়ে উঠে।
একপর্যায়ে আ.লীগ নেতা মামুন ওই ভুক্তভোগী নারী কে বিয়ের প্রস্তাবের প্রলোভন দেয়। প্রলোভনে পড়ে ভুক্তভোগী নারী ২০২৩ইং সালের ৫ই মার্চ বিকেলে আ.লীগ নেতা মামুনের বাড়িতে আসেন। আ.লীগ নেতা মামুন ভুক্তভোগী নারীর সাথে ছল চাতুরী করার একপর্যায়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে জোরপূর্বকভাবে কয়েকবার ধর্ষণ করেন। আ.লীগ নেতা মামুন ভুক্তভোগী নারীকে এই ঘটনা কাওকে বলতে নিষেধ করেন।
আ.লীগ নেতা এই ঘটনার পর থেকেই বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ভুক্তভোগী নারীকে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বারংবার ধর্ষণ করেন। এক সময় ভুক্তভোগী নারী আ.লীগ নেতা মামুনকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে, আ.লীগ নেতা মামুন একজন মৌলভী ডেকে বিয়েও করেন ভুক্তভোগী নারীকে। ভুক্তভোগী নারী কাবিনের কথা বললে আ.লীগ নেতা মামুন ভুক্তভোগী নারী কে খারাপ মেয়ে বলে গালিগালাজ করেন এবং বিয়ে না করার কথা জানিয়ে দেন। পরে ভুক্তভোগী নারী স্থানীয়ভাবে সালিশি দরবারের আয়োজন করলেও আ.লীগ নেতা মামুন ওই দরবারে উপস্থিত হোন নাই। ভুক্তভোগী নারী অবশেষে বাধ্য হয়ে সুষ্ঠু বিচারের আশায় গত বছর ২০২৩ইং সালের ২১ই মে মামুনের বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে জেলা আদালতে মামলা দায়ের করেন।
Subscribe
Subscribe to our newsletter to get our newest articles instantly!