ইউরোপে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। গতকাল সোমবার পর্যন্ত অস্ট্রিয়া, চেক প্রজাতন্ত্র, পোল্যান্ড ও রোমানিয়ায় বন্যায় কমপক্ষে ১৮ জন মারা গেছেন।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, অস্ট্রিয়ায় চারজন, চেক প্রজাতন্ত্রে তিনজন, পোল্যান্ডে চারজন ও রোমানিয়ায় সাতজন মারা গেছেন।
বন্যার কবলে পড়া প্রতিবেশী দেশগুলোকে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ। দেশটি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছে।
ইউরোপের কয়েক কয়েকটি দেশে চলমান বন্যা পরিস্থিতে ওলাফ শলৎজ তাঁর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। গতকাল কাজাখস্তান সফরকালে জার্মান চ্যান্সেলর বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিবেশী দেশগুলোর নাগরিকদের সহায়তার আমরা সাধ্যমতো সাহায্য করব।’
বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক তাঁর মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠকে ডেকেছেন। বলেছেন, তিনি বিপর্যয় অবস্থা ঘোষণা করে একটি ডিক্রি তৈরি করেছেন। মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের পর তা জারি হবে।
দক্ষিণ-পশ্চিম পোল্যান্ডের ব্রেসলাউ শহরটি বন্যা মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। আগামীকাল বুধবার নাগাদ শহরটির পরিস্থিতি খারাপ হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
চেক প্রজাতন্ত্রের তৃতীয় বৃহত্তম অস্ট্রাভা শহর রক্ষাকারী বেশ কয়েকটি বাঁধ ভেঙে গেছে। শহরে হু হু করে প্রবেশ করছে বন্যার পানি। শহরটির কিছু বাসিন্দাকে ইতিমধ্যে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ২ লক্ষ ৮৫ হাজার বাসিন্দা অধ্যুষিত অস্ট্রাভা শহরের অবস্থান ওডার ও ওপাভা নদীর মিলন স্থলে। এই এলাকায় বন্যার কারণে বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ রয়েছে।
রোমানিয়ায় বন্যায় সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটির বার্তা সংস্থা মিডিয়াফ্যাক্স নাগরিক সুরক্ষা সংস্থার বরাত দিয়ে জানিয়েছে, মারা যাওয়া ব্যক্তিরা মূলত বয়স্ক মানুষ।
অস্ট্রিয়ায় চলতি সপ্তাহের শুরুতে বন্যাকবলিত হয়ে পড়া এলাকায় আরও বৃষ্টির আশঙ্কা করা হচ্ছে। দেশটিতে বন্যার পানির তোড়ে বেশ কিছু বাঁধ ভেঙে যাওয়ার উচ্চঝুঁকিতে রয়েছে।
অস্ট্রিয়ার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নিম্ন অস্ট্রিয়া রাজ্যে গতকাল সকাল নাগাদ অন্তত ১০টি বাঁধ ভেঙে গেছে। রাজ্যে ২০০টির বেশি রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অনেক বাসিন্দাকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এই এলাকার প্রায় ৩ হাজার ৫০০ পরিবার বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে।
জার্মানির ড্রেসডেনের এলব নদীর পানির স্তর বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। তবে স্যাক্সনি রাজ্যে বৃষ্টি কমে যাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ ছাড়া বাভারিয়া রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি আগামীকাল থেকে ধীরে ধীরে উন্নতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
পূর্ব ও মধ্য ইউরোপের বিভিন্ন দেশের এই বন্যার বিষয়ে জলবায়ু গবেষকেরা বলেছেন, এর জন্য দায়ী জলবায়ু পরিবর্তন।
Subscribe
Subscribe to our newsletter to get our newest articles instantly!