সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ঋণ কেলেঙ্কারির অভিযোগে এক চীনা নাগরিক-সহ ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা গোয়েন্দা পুলিশ।
এই অপারেশনের মূল পরিকল্পনাকারী ৬০ বছর বয়সী ‘ঝাং জি ঝাং’ চীনা নাগরিক হিসাবে চিহ্নিত।
রাজধানীর হাতিরঝিল ও কাফরুল থানায় দায়ের করা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিবি) গোয়েন্দা শাখা।
এই চক্রটি বৈধ প্রতিষ্ঠানের কোনো যোগসাজেশ ছাড়াই সহজেই ঋণের সুযোগ এবং চাকরির আবেদনের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে প্রতারণামূলক পরিকল্পনায় জড়িত ছিল।
পুলিশ অভিযানের সময় সন্দেহভাজনদের কাছ থেকে প্রমাণসহ জব্দ করেছে ২৯টি মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট যা থেকে তথ্য উন্মোচন হয়েছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ও গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান মোহাম্মদ হারুন-অর-রশিদ গত শনিবার বলেছেন, এই গ্রুপটি গত দুই বছরে ২০০ কোটি টাকার বেশি চুরি করেছে।
তিনি জানান, তবে এই টাকার কোনোটাই বাংলাদেশে নেই; সব টাকা চীনে পাচার করা হয়ে গেছে।
শুধু গত ছয় মাসেই মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে ৫০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে। দেশে অন্তত দেড় হাজার লোক এই চক্রের শিকার হয়েছে। ডিবি প্রধান তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, চীনা নাগরিকদের দ্বারা তৈরি একটি অ্যাপের সার্ভার সিঙ্গাপুরে রয়েছে। আর কল সেন্টারগুলো বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে অবস্থিত।
ভুক্তভোগীদের সামান্য কিছু টাকা দিয়ে লাখ লাখ টাকা চাঁদাবাজি করতো এই চক্র।
পুলিশ কর্মকর্তা হারুন জানান, তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের প্রলুব্ধ করে অ্যাপটি ডাউনলোড করার জন্য। যেটি একবার ইনস্টল করার পরে, প্রতারকরা ভিকটিমদের মোবাইল ফোনে ফটো, ভিডিও এবং যোগাযোগের তালিকার মতো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অ্যাক্সেস করার অনুমতি দেয়। পরবর্তীসময়ে, স্ক্যামাররা তথ্যগুলি দিয়ে ভুক্তভোগীদের ব্ল্যাকমেইলিং করত এবং অর্থ আদায়ের জন্য ব্যবহার করত। কখনও কখনও মিথ্যা ছবি এবং ভিডিও তৈরি করে আশ্রয়ের সুযোগ খুঁজত।
হারুন আরো বলেন, প্রতিবেশী দেশে এসব অ্যাপ থেকে ঋণ নিয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হয়ে ৬০ জনের বেশি মানুষ আত্মহত্যা করেছে। বাংলাদেশে কেউ আত্মহত্যা করেছে কিনা তা জানা যায়নি। ডিবি প্রধান পরামর্শ দেন এই চক্রের দ্বারা কেউ প্রতারিত হলে ভিকটিমকে মামলা করতে হবে।
তিনি আরও জানান, এই চক্রের সঙ্গে আরও অনেকে জড়িত রয়েছে। তারা আত্মগোপনে চলে যায়। তাদের আইনের আওতায় আনতে ডিবির অভিযান চলছে।
Subscribe
Subscribe to our newsletter to get our newest articles instantly!