কিশোরগঞ্জে পৌরসভার বাণিজ্যিক প্রাণকেন্দ্র গৌরাঙ্গবাজার ব্রীজটি ছিল দীর্ঘদিন হকারদের দখলে। বিভিন্ন সড়ক ও ফুটপাত দখল করে গড়ে ওঠা প্রায় ৩০০টি অবৈধ হকারের দোকান উচ্ছেদ করেছে কিশোরগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ প্রশাসন।
গত ৮ জানুয়ারি থেকে গত ১৫ জানুয়ারি, সোমবার পর্যন্ত কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশের উদ্যোগে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। কেননা পথচারী চলাচল ও রাস্তায় যানবাহন চলাচলে দুর্ভোগে ছিলো কিশোরগঞ্জ পৌরবাসী।
কিশোরগঞ্জে মডেল থানা পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে ব্রীজের দুই পাশের ফুটপাতে অবৈধ ভাসমান হকারদের দোকানগুলোকে উচ্ছেদ করে। যার জন্য প্রাণ ফিরে পায় পৌরসভায় অবস্থিত গৌরাঙ্গবাজার ব্রীজটি। একদিকে জনগণের ভোগান্তি ও যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। অন্যদিকে পৌরবাসী ফেলেছে স্বস্তির নি:শ্বাস। এজন্য কিশোরগঞ্জ পৌরবাসী ধন্যবাদ জানিয়েছেন কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশকে।
কিশোরগঞ্জে পৌরবাসীরা বলছেন, অবৈধ হকারদের উচ্ছেদ করায় শহরে যানজট কমে আসবে। তবে হকার ও নিম্ন আয়ের মানুষদের কথা বিবেচনা করে ছুটির দিন অর্থাৎ শুক্রবার এবং শনিবার মার্কেটে হকারদের বসানোর জন্য প্রশাসনের নিকট দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
কিশোরগঞ্জে পৌরসভার গৌরাঙ্গবাজারের স্থায়ী বাসিন্দা শাওন আহমেদ নিলয় বলেন, শহরে জ্যামের কারণে ব্যাপক ভোগান্তির সৃষ্টি হয়। জ্যামের অন্যতম কারণ হলো সড়ক ও ফুটপাত অবৈধ দখল করে হকারদের ব্যবসা। দিনের বেলায় যানজট পেরিয়ে গৌরাঙ্গবাজারের মোড় থেকে সৈয়দ নজরুল ইসলাম হাসপাতালে যেতে সময় লাগে প্রায় ১ ঘন্টা। অথচ যানজট না থাকলে ওই পথে যেতে সময় লাগে ১৫-২০ মিনিট। এসব অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদের কারণে যদি এখন একটু স্বস্তি পাই।
বড় বাজারের চাল ব্যবসায়ী এমদাদুল হক রাজন কিশোরগঞ্জ পোস্ট কে বলেন, ‘’গরীব ও নিম্নবিত্ত মানুষেরা এবং হকারেরা যেন উপকৃত হয় সেজন্য ছুটির দিনের মার্কেট প্রয়োজন এই পৌরসভাতে। এটা আমাদের দাবি। এতে করে উচ্ছেদকৃত হকারদেরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।’
গোপন সূত্রের তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, কিশোরগঞ্জ পৌরসভায় প্রভাবশালী চক্র দ্বারা গৌরাঙ্গ বাজার, একরামপুর ব্রিজ, তেরি পট্টি, পুরানথানা-বড়বাজার সংযোগ ব্রিজের সড়ক ও ফুটপাত দখল করে প্রত্যেক হকারের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা জামানত নিয়ে এইসব অবৈধ দোকান ভাড়া দেয়া হত। ভাড়া বাবদ প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট হারে হকারদের চাঁদা দেয়া লাগতো।
কিশোরগঞ্জে মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তুফা কিশোরগঞ্জ পোস্ট কে বলেন,’কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ স্যারের দিক নির্দেশনায় ও কিশোরগঞ্জ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনতোষ বিশ্বাস স্যারের নেতৃত্বে আমরা গৌরাঙ্গবাজার ব্রীজের দুই পাশের ফুটপাত থেকে প্রায় ৩০০টি অবৈধ দোকান হকারদের কাছ থেকে দখলমুক্ত করতে পেরেছি। ফুটপাত ও রাস্তার দুই পাশে অবৈধ পার্কিং এর জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছি। কিশোরগঞ্জে পৌরশহর কে নিরাপদ ও বাসযোগ্য করতে আমাদের এই কার্যক্রম সবসময় অব্যাহত থাকবে।’’
কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. পারভেজ মিয়া বলেন, শুক্রবার এবং শনিবার সরকারি ছুটির এই দুই দিন হলিডে মার্কেট করার পরিকল্পনা আছে। হলিডে বা ছুটির দিনের মার্কেট হলে খুব কম টাকায় গরীব ও নিম্নবিত্তরা তাদের দৈনিক ব্যবহার্য জিনিসপত্র এই মার্কেট থেকে কেনাকাটা করতে পারবেন।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ কিশোরগঞ্জ পোস্ট কে বলেন, কিশোরগঞ্জ পৌর শহরকে যানজট মুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এতে করে শহরের সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পাবে। কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশ যানজট নিরসনে তার সার্মথ্যের সবটুকু ঢেলে দিবে শহরবাসীর জন্য।
Subscribe
Subscribe to our newsletter to get our newest articles instantly!