কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে নিজের বাবাকে নৃশংসভাবে জবাই করে হত্যা করেছেন ছেলে সোহেল মিয়া। জমি বিক্রির টাকা হাতিয়ে নিতে বন্ধুদের সহায়তায় পিতাকে হত্যা করেন তিনি। শনিবার সকালে কিশোরগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘটনার চাঞ্চল্যকর বিবরণ তুলে ধরেন।
অভিযুক্তদের পরিচয়
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে প্রধান অভিযুক্ত সোহেল মিয়া (২৪), তার সহযোগী ইলেকট্রিশিয়ান বাবুল মিয়া (৩২), কসাই নজরুল ইসলাম (৪৫), এবং রাজমিস্ত্রী সুমন মিয়া (২৬) রয়েছেন। নিহত নিবু মিয়া (৬৫) বাজিতপুর উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।
মরদেহ উদ্ধার ও হত্যার রহস্য উদঘাটন
গত ২০ অক্টোবর দুপুরে বাজিতপুরের সুলতানপুর এলাকার একটি ধানখেত থেকে নিবু মিয়ার হাত-পা বাঁধা এবং গলা কাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঐদিনই নিহতের বড় ছেলে আব্দুর রহমান হৃদয় বাদী হয়ে বাজিতপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
হত্যার পেছনে জমির টাকার লোভ
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী জানান, এক বছর আগে নিবু মিয়া জমি বিক্রি করে ২১ লাখ টাকা পান, যার মধ্যে ৬ লাখ টাকা দিয়ে ছোট ছেলে সোহেল মিয়াকে বিদেশে পাঠানো হয়। কিন্তু ছয় মাস পর সোহেল দেশে ফিরে আসেন এবং পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন। এরপর সংসারের খরচ চালাতে এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে একটি পুরাতন অটোরিকশা কেনেন। তিনি জমি বিক্রির বাকি টাকা বাবার কাছে দাবি করলে তা নিয়ে পিতা-পুত্রের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়।
প্রকাশ্যে এলো নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা
হাছান চৌধুরী আরও জানান, নিহত নিবু মিয়ার কাছে থাকা টাকা ছিনিয়ে নিতেই সোহেল তার বন্ধুদের সহায়তায় পিতাকে হত্যা করেন। হত্যাকাণ্ডের পর আসামি বাবুল মিয়াকে দক্ষিণ পিরিজপুর বাজার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার স্বীকারোক্তিতে হত্যায় জড়িত অন্যান্যদেরও গ্রেপ্তার করা হয়। আদালতে ১৬৪ ধারা জবানবন্দিতে বাবুল মিয়া জানান, সোহেল মিয়ার নির্দেশেই নিবু মিয়াকে হত্যা করা হয়েছিল।
গ্রেপ্তার ও বিচারের অপেক্ষা
এই নির্মম হত্যাকাণ্ড এলাকাবাসীর মাঝে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। পুলিশ বলছে, আসামিদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে কাজ চলছে।
Subscribe
Subscribe to our newsletter to get our newest articles instantly!