গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সারাদেশের ন্যায় কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন থানায় একের পর এক মামলা দায়ের করা হচ্ছে। হত্যা, হত্যাচেষ্টা, অগ্নিসংযোগ, বিস্ফোরক আইনে দায়েরকৃত এইসব মামলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী থেকে শুরু করে দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ও আসামী করা হচ্ছে।
যেই ছাত্র আন্দোলনের জের ধরে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন, সেই ছাত্র আন্দোলনে বিএনপির সক্রিয় ভূমিকা রয়েছে। ভূমিকা রয়েছে কিশোরগঞ্জ জেলা যুবদল কর্মী রুহুল আমিনের ও।
তবে ছাত্র-জনতার উপর হামলার ঘটনায় সদর থানায় দায়েরকৃত মামলায় যুবদল কর্মী রুহুল আমিনকে ছাত্রলীগ কর্মী হিসেবে প্রদর্শন করে উক্ত মামলায় আসামী করা হয়েছে।
বিগত আওয়ামী শাসনামলে ১৭ মাসের কারাভোগ ও ১০ দিনের রিমান্ডে নির্যাতনের শিকার রুহুল আমিন আসামীর তালিকায় নিজের নাম দেখে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি ছাত্রজীবন থেকেই ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে যুক্ত, বর্তমানে যুবদলের একজন কর্মী। শেখ হাসিনা সরকারের পুরো শাসনামলেই আমি আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে সক্রিয় ছিলাম। সরকারের বিরুদ্ধে অনলাইনে লেখা-লেখির কারণে আইসিটি আইনে কিশোরগঞ্জ সদর থানা ও পার্শ্ববর্তী নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানায় আমার নামে দুইটি মামলা হয়। কিশোরগঞ্জ সদর থানার মামলায় পুলিশ আমাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেয়। ১৭ মাস কারাভোগের পরও ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করি। আমার ভাতিজা জিহাদুল ইসলাম নীরব বাম চোখে গুলিবিদ্ধ হয়ে দৃষ্টিশক্তি হারান।’
রুহুল আমিনের অভিযোগ অবশ্য জেলা বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের উপর। কারণ তাদের তত্ত্বাবধানেই নাকি মামলাগুলো করা হচ্ছে এবং তারা মামলা নিয়ে মোটা অংকের টাকার বাণিজ্য করছেন।
গত মঙ্গলবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বরাবর এসংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী আসামী রুহুল আমীন, যা কেন্দ্রীয় কার্যালয় কর্তৃক গৃহীত হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কৌশলে বিষয়টি এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, মামলার আইনি বিষয়গুলো জাহাঙ্গীর আলম মোল্লা দেখভাল করলেও সার্বিক বিষয়গুলোতে সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম রয়েছেন।
মামলার আইনি বিষয়গুলোর দেখভালের কথা স্বীকার করে জাহাঙ্গীর আলম মোল্লা বলেন, নিরপরাধ কাউকে যেন মামলায় না জড়ানো হয় এ বিষয়ে নেতৃবৃন্দকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবুও অজান্তে কিছু ভুলভ্রান্তি হয়ে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বলেন, আমি দেখে দেওয়ার পরেও ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে কাউকে কাউকে আসামী করা হচ্ছে। তবে আমি ওসি সাহেবকে চার্জশিট থেকে তাদের নাম বাদ দিতে বলে দিয়েছি।
উল্লেখ্য যে, গত ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার উপর হামলার ঘটনায় কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করে শিক্ষানবিশ আইনজীবী সুজন মিয়া। মামলায় ৯০ জনের নামোল্লেখ সহ অজ্ঞাতনামা আরো ২০০/২৫০ জনকে আসামী করা হয়। যুবদল কর্মী রুহুল আমীন হলো এই মামলার ৩৬ নম্বর আসামী।
Subscribe
Subscribe to our newsletter to get our newest articles instantly!